চোখ বন্ধ করো, এক মুহূর্তের জন্য থামো এবং গভীর নিঃশ্বাস নাও
জাফরান, মধু এবং ভাজা মাংসের সুঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে
সামান্য গ্যাসোলিন এর মধ্যে মিশ্রিত
সূর্যের তাপে আবর্জনাগুলো বিযোজিত… আমি চোখ খুললাম
কয়েক মিটার দূরেই কাফেলাগুলো আমাকে অতিক্রম করছে
Djellaba পরিহিত এক বৃদ্ধা আমাকে আড়চোখে দেখছে
ত্বকের রঙ তো একই
তবুও আমি দেখতে পাই না
পর্যটকদের প্রাসাদে কি চলছে
যার পিছনে ভঙ্গুর বাড়িগুলো লুকিয়ে আছে
পথভোলা বিড়াল, ভিক্ষুক শিশুরা, জন-অধ্যুষিত বাজারগুলো
ভেড়াসহ পরিবহনকারী গাড়ি, ঘর্ঘর করা বাস, চিৎকাররত ট্যাক্সি ড্রাইভার
ছোট্ট ছেলেটি খালিপায়ে বল খেলছে
সাপুড়ে এবং স্ট্রিট পেইন্টাররা
আমার খোলা কান দিয়ে সবকিছুই শুনতে পারছি, বুঝতে পারছি
যদিও এখানে জন্মাইনি
তারপরও আমার পরিবারের গাছের শিকড়
পৃথিবীর এই প্রান্তেই তলিয়ে গিয়েছে
নিজেকে খুঁজে বেড়াচ্ছি
নাদোরের এই রাস্তাতেই… নাদোর…
মনে হচ্ছে বাড়িতেই আছি, নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি, হারিয়ে ফেলেছি…
লণ্ঠনগুলো জ্বলে উঠেছে, সমুদ্রপাড়ে আমি হাঁটছি
বালুতে নিজের ছায়া দেখতে পাচ্ছি
খালিপায়ে পানির উপর দাঁড়িয়ে আছি, মৃদু বাতাস ঢেউগুলোকে তরঙ্গিত করছে
দূর-দূরান্তের দিকে তাকাও, উড়তে থাকা পতাকা, দিপ্তিময় পর্বতগুলো
আগ্নেয়গিরিগুলো ঘুমাচ্ছে, পৃথিবীর উপরে সোনালি তারাগুলো ঝিকমিক করছে
একজন বৃদ্ধ তীরে নৌকা ভিরাচ্ছে
দড়িগুলো ধরেছে তার বলিরেখাযুক্ত হাতগুলো দিয়ে
তাকে সালাম দিলাম, তিনি হাসলেন
তার ক্লান্ত চেহারাটিই হাজার কথা বলে দেয়
এই মুহূর্তগুলোতে নিজেকে জিজ্ঞেস করি
এখানে জন্ম নিলে কি হত?
ভিন্ন বন্ধুবান্ধব, ভিন্ন মূল্যবোধ, কিন্তু হৃদয় তো একই ভাবে স্পন্দিত হতো…
নিজেকে খুঁজে বেড়াচ্ছি
নাদোরের এই রাস্তাতেই… নাদোর…
মনে হচ্ছে বাড়িতেই আছি, নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি, হারিয়ে ফেলেছি…
আমার পৃথিবীদ্বয়ের মধ্যে ২০০০ মাইলের ব্যবধান
নিজেকে প্রায়ই বিচ্ছিন্ন মনে হয়, এই বিচ্ছিন্নতাকে মিলিত করতে চাই
আমি আসলে কোথাকার তা আমি জানতে চাই
আমার স্বপ্নে তো মাইন নদী ভু-মধ্যসাগরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত
আমি নিজেকে খুঁজে বেড়াচ্ছি
নাদোরের এই রাস্তাতেই… নাদোর…
মনে হচ্ছে বাড়িতেই আছি, নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি, হারিয়ে ফেলেছি…